বগুড়ার গাবতলীতে ‘ছেলে ধরা’ সন্দেহে চার যুবককে গণপিটুনি, পিকআপ ভ্যানে আগুন এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এক হাজার ২শ’ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে বাকিদের অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে মামলায়।
গাবতলী থানার এসআই সুজাউদৌলা বাদী হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে গাবতলী থানায় এই মামলা করেন।
এদিকে গণপিটুনির স্বীকার ওই চার যুবক ছেলে ধরা নয়, তারা ছিনতাইকারী বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা করা হয়েছে।
গণপিটুনির মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন- সারিয়াকান্দি উপজেলার হাট ফুলবাড়ী গ্রামের ঘেতা সরকার (৫৪), একই গ্রামের লিটন (৩৫), চকি বাড়ী গ্রামের আক্কাস আলী (৪৫), হাট ফুলবাড়ী দক্ষিণপাড়া গ্রামের মামুন সরকার (৩০), হরিনা গ্রামের জেমন্স জয় (১৯), হরিনা বালুচরা গ্রামের জাকির হোসেন (২২), গাবতলীর হাতিবান্ধা দক্ষিণপাড়া গ্রামের আইয়ুব হোসেন (৩০) একই গ্রামের সুমন বাবু (১৯), শিলদহবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের মাইদুল (৩৩), সোলারতাইর গ্রামের জিম বাবু (২০), বটিয়াভাঙ্গা গ্রামের জহুরুল সরকার (৪০) একই গ্রামের রাব্বি (২০) ও গড়েরবাড়ী গ্রামের জনি (২০)। গ্রেফতার ব্যক্তিদের মঙ্গলবার জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ছেলে ধরা সন্দেহে আটক গাবতলীর কর্ণিপাড়া গ্রামের হযরত আলী প্রাং এর ছেলে ফাহিম প্রাং (২৪), পারধুনট মধ্যপাড়া গ্রামের আ. রশিদের ছেলে লুৎফর রহমান (৩৫), ধুনট জোড়শিমুল গ্রামের নজির হোসেনের ছেলে দুলাল হোসেন (২২) ও তার ভাই নিয়ামুল হোসেন (৩৬) বিরুদ্ধে পিকআপ ভ্যান ছিনতাই ও মুক্তিপন দাবির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
মামলার বাদী পিকআপ ভ্যানের মালিক মুসা মিয়া রুপগঞ্জ উপজেলার নারিন্দা গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে। মুসা মিয়া জানান, ২১ জুলাই ওই যুবকরা পিকআপ ভ্যানটি ভাড়া নেন। তারা ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে একটি ওয়ারড্রপ (ফার্নিচার) নিয়ে রংপুরের মিঠাপুকুর যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। পথে সিরাজগঞ্জ এলাকায় এসে ওই যুবকরা পিকআপ চালক সাকিলকে (৩০) চাকুর মুখে জিম্মি করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন।
তিনি জানান, পরে পিকআপ নিয়ে তারা বগুড়ার গাবতলীর দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বটিয়াভাঙ্গা ৪মাথার মোড়ে এসে থামে। সেখান থেকে তারা ছিনতা করা পিকআপ ভ্যানের মালিক মুসা মিয়ার কাছে ফোনে দুইলাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে সোমবার স্থানীয় লোকজন ওই চারজনকে ছেলে ধরা সন্দেহে আটক করে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন।
এ ব্যাপারে গাবতলী থানার ওসি সেলিম হোসেন বলেন, সরকারি কাছে বাধা, গণপিটুনি ও পিকআপ ভ্যান পুড়িয়ে দেয়ায় ১৩জনকে পুলিশের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে ছেলে ধরা সন্দেহে যে চারজনকে আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পিকআপ ভ্যানের মালিক আবু মুসা বাদী হয়ে পিকআপ ভ্যান ছিনতাই ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মামলা করেছেন।