ভারতীয় সরকার কাশ্মীরিদের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার ঘটনায় কাশ্মীরিদের সমর্থন জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, কাশ্মীরিদের প্রতি দায়বদ্ধতা পূরণে যে কোনো কিছু করতে পাক সেনাবাহিনী প্রস্তুত। খবর পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা কমান্ডারদের বৈঠক শেষে দেশটির সেনাবাহিনীর আইএসপিআরের মুখপাত্র আসিফ গফুর বলেন, কাশ্মীরি জনগণের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার জন্য যতদূর করতে হয় তার জন্য পাক সেনাবাহিনী প্রস্তুত।
জেনারেল গফুর তার অফিসিয়াল পেজে এক টুইট বার্তায় বলেন, কয়েক দশক আগে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বা ৩৫/এ-এর মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের দখলকে বৈধকরণে ভারতীয় প্রচেষ্টাকে কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি পাকিস্তান, যেটি এখন ভারত নিজেই বাতিল করে দিয়েছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাবেদ বলেন, কাশ্মীরিদের শেষ সংগ্রামে কাশ্মীরিদের শেষ লড়াইয় পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দৃঢ়ভাবে তাদের পাশে রয়েছে। আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে যতদূর করতে হয় তার জন্য আমরা প্রস্তুত।ভারত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কাশ্মীরিদের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ায় রাওয়ালপিন্ডিতে জেনারেলের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে সোমবার সকালে ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রস্তাব করেন। সংসদের অনুমোদনের পরই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন।রাষ্ট্রপতির সইয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেয়া ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হয়। সেই সঙ্গে একটি স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদাও হারায় কাশ্মীর।
আইনটি পাস করার আগে থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দি করে রেখেছিল ভারত সরকার। পরে তাদের সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়।ভারতীয় সংবিধানের ৩৫-ক ধারা অনুযায়ী কাশ্মীরের বাসিন্দা নয় এমন ভারতীয়দের সম্পদের মালিক হওয়া এবং চাকরি পাওয়ায় বাধা ছিল।
৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীরের এমন এক স্বায়ত্তশাসন রয়েছে যা ১৯৪৭ সালের পর দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশের রাজ্য পায়নি।অনুচ্ছেদ ৩৭০ ভারতীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরকে নিজেদের সংবিধান এবং একটি আলাদা পতাকার স্বাধীনতা দিয়েছে। এ ছাড়া পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়াদি, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দিয়েছে।
সংসদে ক্ষমতাসীন জোট সোমবার ধারা দুটি বাতিলের যে বিল উত্থাপন করে তা পাস হওয়ায় কাশ্মীরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দশা এখন ফিলিস্তিন কিংবা মিয়ানমারের রাখাইনের রোহিঙ্গাদের মতো হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।