আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে ভ্যানগার্ড খ্যাত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের নতুন নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। আর এই দুই শীর্ষ পদে নির্বাচন করার জন্য প্রার্থীদের অবশ্যই ‘অবিবাহিত’ হতে হবে বলে ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ রয়েছে।
তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনের জন্য অন্তত ১৩ জন ‘বিবাহিত নেতা’ মনোনয়নপত্র কিনেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১০ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন বিবাহিত নেতা মনোনয়নপত্র কিনেছেন। ছাত্রদলের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সভাপতি পদে মনোনয়ন নেয়া বিবাহিত নেতাদের মধ্যে আছেন- আল মেহেদি তালুকদার , আরাফাত বিল্লাহ খান, আজিম উদ্দিন মেরাজ, মো. আব্বাস আলী, মাইনুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ ভদ্র, নজরুল ইসলাম নাহিদ, সিহাবুর রহমান।আর সাধারণ সম্পাদক পদে যেসব বিবাহিত নেতারা মনোনয়নপত্র কিনেছেন তারা হলেন- নাদিয়া পাঠান পাপন, সিরাজুল ইসলাম, মাহমুদুল আলম শাহিন।
এ বিষয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ করা সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পদপ্রত্যাশী এবং আমার প্রতিদ্বন্দ্বীরা এ ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়াচ্ছে। আমি বিবাহিত নই। যারা এ অভিযোগ তুলেছে, তারা এ বিষয়ে কোনও ডকুমেন্ট দেখাতে পারবে না। আমাকে রাজনৈতি মহলে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে প্রার্থী বাছাই কমিটির প্রধান ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আমরা মনগড়া কিছু করতে পারবো না। কারণ আমাদের একটা বিধি-বিধান আছে।’
যারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন তাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই কমিটি কিভাবে খোঁজ-খবর নিচ্ছে- জানতে চাইলে মিলন বলেন, ‘তারা নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা দেবে। এর মধ্য দিয়েই আমরা তাদের সম্পর্কে জেনে যাবো।’এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ‘যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
শীর্ষ এই দুই পদে নির্বাচনে আপিল কমিটির প্রধান ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ছাত্রদলের নেতা হতে হলে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে ও ছাত্রত্ব থাকতে হবে। বিবাহিতরা ছাত্রদলের প্রার্থী হতে পারবেন না। এ বিষয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও নির্বাচন পরিচালনায় যারা সংশ্লিষ্ট আছেন তারা সবাই অবহিত আছেন।’
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই ২০০০ সালে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রত্ব আছে এমন প্রমাণপত্র অবশ্যই প্রার্থীদেরকে দাখিল করতে হবে। প্রার্থীকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে এবং পাসের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। প্রমাণের জন্য সকল সার্টিফিকেটের মূল কপি প্রার্থীদেরকে নিয়ে আসতে হবে।
এদিকে গত শনি ও রবিবার ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্বে স্থান পেতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র কিনেছেন ১১০ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৪৪ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৬৬ জন। তবে এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কেবলমাত্র সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন নারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের নাদিয়া পাঠান পাপন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনসুরা আলম এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ডালিয়া রহমান।
ফরম বিতরণের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাবেক দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, ‘প্রার্থী হতে ইচ্ছুকরা ১০০ টাকা মূল্যমানে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রার্থীদেরকে কাউন্সিল-২০১৯ এর তফসিলসহ একটি ফাইল দেয়া হয়। এতে মনোনয়ন ফরম, আবেদনপত্র, প্রার্থী যোগ্যতার নিয়মাবলি, আচরণবিধি, পুনঃতফসিলের কপি, প্রত্যয়নপত্র ও ভোটার তালিকা রয়েছে।’
এরইমধ্যে ছাত্রদলের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাছাই কমিটি ও শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আপিল কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এবার সভাপতি পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- আশরাফুল আলম ফকির লিঙ্কন,মো. মামুন খান,হাফিজুর রহমান, আমিনুল হাকিম মুন্সি, খলিলুর রহমান, আসাদুল আলম টিটু, আবু জাহান চৌধুরী হিমেল, এম আর আরজ আলী শান্ত, আল আমিন কাউসার, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, রিয়াজ মো. তানভীর রেজা, মো. ফজলুল হক নিরব, মো. আব্বাস আলী, তানভীর আহমদ খান ইকরাম, জসিম মোল্লা, মো. এরশাদ খান, মো. এহসান মাহমুদ, মো. জুয়েল মৃধা, মাসুদ রানা, মাহমুদুল হাসান বাপ্পী,এবিএম মাহমুদুল আলম সরদার, সোলায়মান হোসাইন, মো. সুরুজ মন্ডল, মো. ইলিয়াছ, মো. আজিম উদ্দিন মেরাজ,জলুর রহমান খোকন, মাইনুল ইসলাম, মো. আবদুল মাজেদ, বিশ্বজিৎ ভদ্র,আল মেহেদি তালুকদার, সাজিদ হাসান বাবু, সিহাবুর রহমান, এস এম আল আমীন, আবদুল হান্নান, মো. আলী হাওলাদার, এসএম আমিনুল ইসলাম, শামীম হোসেন, মো. আল আমিন, আরাফাত বিল্লাহ খান, নজরুল ইসলাম নাহিদ, জসিম উদ্দিন, মাইনুদ্দনি মিলয় ও জামেদ ওমর করিম।
সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- সাইফ মাহমুদ জুয়েল,মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আলাউদ্দিন খান, এম এ কাইয়ুম, মশিউর রহমান রনি, এমদাদুল হক মজুমদার, মানসুরা আলম, মো. হামিদ সাজ্জাদ হোসেন, মো. নাঈম হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, মো. হাসান তানজিল হাসান, শেখ আবু তাহের, মো. তাবিবুর রহমান, এম সাখাওয়াত হোসাইন, ডালিয়া রহমান
মিজানুর রহমান সজীব, আজমীর হোসেন, আমিনুর রহমান আমিন, শাহনেওয়াজ, মুন্সি আনিসুর রহমান, আবদুল মোমেন মিয়া, নাজমুল হক হাবিব, আনিসুর রহমান সুমন, এবিএম জহিরউদ্দিন সোহেল, এন রাকীব জুয়েল, মিজানুর রহমান শরীফ, মো. ওমর ফারুক হিমেল, রিয়াদ মো. ইকবাল হোসেইন, একরামুল হাই নাঈম, ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, মো. আবদুল মান্নান, মো. জামিল হোসেন, ইকবাল হোসাইন শ্যামল, মো. আবুল হাসান চৌধুরী,
এএএম ইয়াহিয়া, নুরুল ইমরান মজমুদার শিশু, মো. মহিন উদ্দিন রাজু, রাকীবুল ইসলাম রাকিব, আরিফুল হক, আজিজুল হক সোহেল, রাশেদ ইকবাল খান, মো. জোবা্ইর আল মাহমুদ রিজভী, সোহেল রানা, মাজেদুল ইসলাম রুম্মন, মাহমুদুল আলম শাহিন, মো. ইউসুফ কামাল জনি, বাবুল আখতার শান্ত, মো. মিজানুর রহমান, নাদিয়া পাঠান পাবন, জাকিরুল ইসলাম জাকির, আশিকুর রহমান সুমন, মো. জহিরুল ইসলাম দিপু, মো. আল মামুন, মো. সাইদুর রহমান সোহেল, মাহতাব উদ্দিন জিমি, জুলহাস উদ্দিন, আতাউর রহমান, কেএমএস মুসাব্বির, কাজী মাজহারুল ইসলাম ,আসাদুজ্জামান, সাদেকুর রহমান সাদিক, আশরাফুল আলম, দেলোয়ার হোসেন, সুলায়মান হোসাইন।