২১২টি ছাগল ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজাহিদ আজমী তান্নাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন আদেশ দেন।আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আঞ্জুমান আরা বেগম মুন্নী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
আইনজীবী আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘আদালত তাঁকে (মুজাহিদ আজমী তান্না) চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন।’এর আগে গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়।
গত ১১ আগস্ট মুজাহিদ আজমী তান্নাসহ নয়জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন র্যাব-২-এর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ফারুখ হোসেন।এজাহার থেকে জানা যায়, যশোরের বারোবাজার পশুর হাট ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকা থেকে গত ১১ আগস্ট সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান পাঁচ ছাগল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, ফারুক বিশ্বাস, মোহাম্মদ মাসুদ, বাবু খান, শেখ সোলেমান ও মো. নুরুজ্জামান। তাঁরা একটি ট্রাকে করে ২১২টি ছাগল নিয়ে আসেন।
এই ব্যবসায়ীরা মোহাম্মদপুরের বাবর রোড এলাকায় গেলে জহুরি মহল্লা এলাকায় তাঁদের ছাগলসহ আটকে রাখা হয়। ছিনতাইকারীরা ছাগলগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে একটি ক্লাবের ভেতরে পাঁচ ব্যবসায়ীকে আটকে রাখে। পরে র্যাব-২-এর একটি টহলদল জিম্মিদশা থেকে ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করে।
ব্যবসায়ীদের উদ্ধারের পর র্যাব-২-এর কমান্ডিং অফিসার পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘১১ আগস্ট, অর্থাৎ ঈদের আগের দিন দুপুর ১২টার দিকে ব্যবসায়ীরা প্রথমে আমাদের ফোনে খবর দেন। খবর দিয়ে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বাবর রোডে ২১২টি ছাগল ছিনতাই করে ট্রাকসহ আটকে রাখা হয়েছে। ওই সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় র্যাবের একটি মোবাইল টিম কাজ করছিল। পরে মোবাইল টিমসহ আমরা ঘটনাস্থলে একটি ক্লাব ঘরের ভেতরে ছাগল ব্যবসায়ীদের আটক অবস্থায় পাই। সেখানে তিনজন ছিনতাইকারী উপস্থিত ছিল। পাশে একটি মাচা করা ট্রাকের ওপর-নিচ মিলে মোট ২১২টি ছাগল ছিল। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে আমরা ব্যবসায়ীদের ও ছিনতাইকারীদের মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করি।’
মামলার তদন্ত কর্মকতা সজীব ঘোষ জানান, তিন আসামি ইয়াসির আরাফাত, জাহিদুল ইসলাম ও মো. রায়হানকে র্যাব-২ থানায় সোপর্দ করে। তাঁদের তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হলে আসামিরা অপরাধ স্বীকার করেন।
সজীব ঘোষ বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাবর রোডের ছাত্রলীগ অফিসের কাছাকাছি স্থানে একটি অস্থায়ী ছাগলের হাট বসান। ওই হাটে ছাগল ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে রাখতেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। জিম্মি করে চাঁদা দাবি করতেন তাঁরা। ছাত্রলীগের তৈরি ওই হাটে ছাগল রাখতেও জোর করা হতো ব্যবসায়ীদের।’