মৃ’ত মানুষের মতো স্ট্রেচারে রীতিমতো প্যাক করে ৪ ঘন্টা কাধে বয়ে গর্ভবতী মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হল। হারহিম করা এই ছবি বক্সা পাহাড়ের।আদমা থেকে এভাবেই প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির জন্য কাধে বয়ে এক মাকে নামানো হল সমতলের হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনির আদমা গ্রামে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০ আগষ্ট একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মা। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি পোষ্ট করেন জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য কর্তা। মুহূর্তে ভাইরাল!
বক্সা ফোর্ট থেকে আরো ৩ কিলোমিটার উপরে লেপচাখা গ্রাম। দুইশত দ্রুকপা মানুষের বসবাস। তারপর আসে চুনাভাটি, সবশেষে আদমা গ্রাম। আদমা থেকে খাড়াই পথে নামলে অবশ্য কালচিনি ব্লকের আরেক প্রান্ত রায়মাটাং পৌঁছানো যায়, তবে সে পথ বি’প’দসঙ্কূল। গত ২০ আগস্ট এই আদমা গ্রাম থেকে দেমকান দুকপা নামের এক প্রসূতি মায়ের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে চারঘন্টা ট্রেক করে উত্তর লতাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
প্রতি ৪০ সেকেন্ডে পৃথিবীতে একজন ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। যারা নিজের জীবন এভাবে শেষ করে দেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা পুরুষ। নিজেদের সমস্যা নিয়ে কথা বলা অথবা কোন বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার প্রবণতা সম্ভবত তাদের কম। এক্ষেত্রে জেনে নেয়া জরুরি যে পাঁচটি বিষয় নিয়ে পুরুষদের কথা বলা দরকার।
নিঃসঙ্গতা নিয়ে কথা বলুন: দীর্ঘ সময়ের নিঃসঙ্গতা একজন মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, সহজে নিরাময় হয় না শরীরে এমন রোগের জন্ম দেয় নিঃসঙ্গতা। তা মানুষের মধ্যে বেপরোয়া আচরণের জন্ম দেয়। একাকীত্বের সাথে স্মৃতিভ্রংশজনিত রোগেরও সম্পর্ক রয়েছে।
২০১৭ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে বিশেষ করে পুরুষদের জন্য এই নিঃসঙ্গতা থেকে বেরিয়ে আসা মুশকিল। পুরুষরা নিজেদের একাকীত্ব স্বীকারও করেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, ‘একা বোধ করি না’ এই কথাটিই বরং পুরুষরা মেয়েদের তুলনায় বেশি বলেন।
ছেলেদের কাঁদতে নেই: যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউগভ-এর ২০১৮ সালের এক হিসেব অনুযায়ী দেশটির ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী পুরুষদের ৫৫ শতাংশ মনে করেন কান্না পুরুষের আচরণের সাথে যায় না বা কান্না পুরুষালী বিষয় নয়। অথচ বহু গবেষণায় দেখা গেছে নিজের মন হালকা করার জন্য কান্না খুব কাজে আসে।
আয়: পরিবারের সবার রুটির যোগান দেয়া পুরুষের দায়িত্ব এই ধারনার কারণে পুরুষরা অনেকেই বাড়তি চাপের মধ্যে থাকেন। পুরুষদের জন্য এই দায়িত্ব বাড়তি বোঝা বলে মনে করা হয়। অর্থনৈতিক বোঝা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। বেকারত্বের সাথে আত্মহত্যার সম্পর্ক রয়েছে বলে ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ: যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা যত বেশি সময় কাটাই তাতে আমরা আরও বেশি নিঃসঙ্গ ও বিষণ্ণ হয়ে পড়ি। এই গবেষণার লেখক মেলিসা হান্ট বলছেন, সামাজিক যোগাযোগের ব্যবহার কমিয়ে দিলে সাধারণত বিষণ্ণতা ও নিঃসঙ্গতার মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক অস্কার ইয়াবারা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যা দেখা যায় তা খুব কম ক্ষেত্রেই বাস্তব জীবনের প্রতিফলন। আপনি এতে ঢুকে যা দেখছেন তা সচরাচর খুবই বাছাই করা বিষয়াদি। কিন্তু মানুষ তবুও নিজের জীবনের সাথে তার তুলনা করে।
শরীর সম্পর্কে ধারণা: তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটি দারুণ ফিগার নিয়ে এখন অনেকেই খুব চিন্তা করেন। তাই মুটিয়ে যাওয়া বা শরীরের কোন খুঁতের সাথেও মানসিক স্বাস্থ্যের যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়।
এই সকল বিষয় নিয়ে পুরুষদের খোলামেলা আলাপ করাকেই এখন উৎসাহিত করা হচ্ছে।