বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবিতে) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর ও অবমাননার অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির করা দায়েরকৃত মামলায় সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সদস্য ফয়সাল আজম ফাইনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে তাজহাট থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। বিষয়টি তাজহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রোকনুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃত অপর দুইজন হলেন- ফাইনের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সুব্রত ঘোষ ও বহিরাগত স্থানীয় সর্দারপাড়ার বাসিন্দা ফিরোজ মিয়া।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২১ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হলের বেশ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর ও শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়ার কক্ষে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সদস্য ফয়সাল আজম ফাইনকে প্রধান আসামি করে ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেন, বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মিথিশ চন্দ্র বর্মণ, ম্যানেজম্যান্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ইমরান কবীর, ছাত্রলীগ নেতা ফজলে রাব্বী, আব্দুর রহমান জিসান, সুব্রত ঘোষ, ফরহাদ হোসেন এলিট ও গোলাম মুর্শিদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও মামলার বাদী তুষার কিবরিয়া বলেন, ‘গত ২১ আগস্ট ফয়সাল আজম ফাইনের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা প্রথমে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে বাধা দেয়। পরে তারা তিনটি রুমে হামলা করে জাতির জনক ও তার কন্যার ছবি ভাংচুর করে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগে বিদ্রোহী গ্রুপ থাকতেই পারে। কিন্তু তারা আগস্ট মাসে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে বাধা দিতে পারে না। একই সঙ্গে আকস্মিকভাবে তারা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে হামলা করে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করার মাধ্যমে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে দু’জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে।
প্রশাসন বাকি আসামিদেরও গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশাবাদ দেন।
বিষয়টি নিয়ে তাজহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রোকনুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়ার দায়েরকৃত বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুরের ঘটনা ও গ্রেফতারের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রেফতারকৃত ফয়সাল আজম ফাইনের অনুসারীরা ক্যাম্পাস ও এলাকায় বিক্ষোভ করে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছে। দৈনিক যুগান্তর।