রায়ের বাজারের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। এরপর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে র্যাব। কারা এই হামলা চালিয়েছিল তার খোঁজ করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে রায়ের বাজারের ‘স্টার বন্ড’ নামে কিশোর গ্যাং সদস্যদের পরিচয়। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল থেকে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-২। এতে নেতৃত্ব দেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী পরিচালক সারওয়ার আলম। পরে রায়ের বাজার, মোহাম্মদপুর এলাকার পৃথক তিনটি স্থান থেকে স্টার বন্ডের ১৭ জনকে আটক করা হয়।
জানা গেছে, রাজধানীর রায়ের বাজার এলাকায় একই ধরনের টি-শার্ট, জুতা, চুলের স্টাইল করে একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় ত্রাস ছড়িয়ে আসছিল। গ্রুপটি ‘স্টার বন্ড’ নামে পরিচিত। এলাকায় রয়েছে পাল্টা আরেকটি গ্রুপ। নাম মোল্লা রাব্বি গ্রুপ। দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে গত বছর স্টার বন্ড গ্রুপের একজন মারা যায়। গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ওই কিশোরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল।
মিলাদ মাহফিলে অংশ নেওয়ার একটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে স্টার বন্ড গ্রুপ। আর এই ছবিতে ‘হা হা’ রিয়েক্ট দেয় মোল্লা রাব্বি গ্রুপের একজন। এতেই ক্ষিপ্ত হয় স্টার বন্ড গ্রুপের সদস্যরা। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকাল থেকেই দা, চাপাতি, লাঠি নিয়ে জড়ো হতে থাকে তারা। উদ্দেশ্য মোল্লা গ্রুপের ওই সদস্যকে শায়েস্তা করা।
এদিকে ২৩ আগস্ট জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা উপলক্ষে পোশাক ও সিভিলে রায়ের বাজার এলাকায় টহলে ছিল র্যাব-২ এর সদস্যরা। স্টার বন্ডের সদস্যরা যখন লাঠিসোটা নিয়ে যাচ্ছিল তখন র্যাবের সিভিল পোশাকে দু’জন সদস্য তাদের দেখতে পায় এবং জিজ্ঞেস করে কোথায় যাচ্ছে? কেন জিজ্ঞেস করা হলো−সে কারণে এই দুই র্যাব সদস্যের ওপর চড়াও হয় গ্যাংয়ের সদস্যরা। কোপানোর জন্য তাদের ধাওয়া দেয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফেরেন র্যাবের ওই দুই সদস্য।
র্যাব সদস্যদের ওপর হামলা চেষ্টার ঘটনায় নড়েচড়ে বসে র্যাব। কারা এই হামলা চালিয়েছিল তার খোঁজ করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে স্টার বন্ড গ্যাংয়ের সদস্যদের পরিচয়।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল থেকে রায়ের বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-২। নেতৃত্ব দেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী পরিচালক সারওয়ার আলম। রায়ের বাজার, মোহাম্মদপুর এলাকায় পৃথক তিনটি স্থান থেকে স্টার বন্ডের ১৭ জনকে আটক করা হয়।
সারওয়ার আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। ছিনতাই, মাদক বিক্রি ও এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সঙ্গে মারামারি করতো। তাদের কাছে ইয়াবাও পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে তারা এই অপরাধের কথা স্বীকার করায় তাদের এক বছরের জন্য কিশোর সংশোধন কেন্দ্র পাঠানো হয়।’
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং) মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্টার বন্ড গ্রুপের অন্য সদস্য ও মোল্লা রাব্বি গ্রুপের সদস্যদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’