মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সরকারের বেতনভুক্ত রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কাজ শুরু করেছে। রবিবার (২৫ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
বৈঠক শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেতনভোগী রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।’ জেলা পর্যায়ে রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জেলায় জেলায় রেকর্ড রুমে রাজাকারদের তালিকা আছে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।’
কবে নাগাদ এই তালিকা প্রণয়ন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ডিসিদের ওপর নির্ভর করছে। তারা যতো তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে পারে ততো ভালো।
এর আগে গত ২৬ মে, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়- রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা সংগ্রহ করে তা রক্ষণাবেক্ষণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আধা সরকারি (ডিও) চিঠি পাঠানোর কথা জানানো হয়েছে। এদিকে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাজাকারদের তালিকা প্রণয়নে সব জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি তালিকা প্রস্তুত করা সম্ভব হবে বলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানানো হয়।
মে মাসে সংসদীয় কমিটির ওই বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা যায়, কমিটির আগের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বেতন, ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্যদের দেশদ্রোহী আখ্যায়িত করে তাদের আসনগুলো অবৈধভাগে শূন্য ঘোষণা করে তাদের স্থলে যাদের সদস্য করা হয়েছিল তাদের নাম স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত ও সংরক্ষণে আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে ওই কার্যপত্রে দেখা যায়।
শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, মইনউদ্দীন খান বাদল, রাজি উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) এ বি তাজুল ইসলাম এবং কাজী ফিরোজ রশীদ অংশগ্রহণ করেন।