সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে প্রাইম টার্গেট ছিলেন শেখ হাসিনা। হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নান স্বীকারোক্তিতে বলেছেন যে, হাওয়া ভবনের নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সত্যকে এড়ানোর উপায় নেই।
তিনি বলেন, ইতিহাসের প্রথম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার ছিলেন রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার। শেক্সপিয়ার যেটিকে নৃংশস হত্যাকাণ্ড বলেছেন। আমি বলব, শেক্সপিয়ার বেঁচে থাকলে ‘৭৫-এর হত্যাকাণ্ডকে নৃশংসতম বলতেন।
রোববার রাজধানীর নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ওই সভার আয়োজন করা হয়।
এতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু ও দেশের মানুষের সঙ্গে জিয়া ও তার পরিবার যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তারা সেই বিশ্বাসঘাতকতাই পেয়েছেন। অন্তঃসত্ত্বা, শিশু, নববিবাহিত বধূসহ ১৫ আগস্ট যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল বিশ্বের কোথাও এমন মর্মান্তিক হত্যার নজির নেই।
তিনি বলেন, ‘৭৫-এর হত্যাকারীদের যদি সে সময়ে পৃষ্ঠপোষকতা করা না হতো, তাহলে ‘৮১তে আরেকটি হত্যাকাণ্ড হতো না। জেনারেল জিয়াকে হত্যার সাহস করত না। যারা ‘৭৫-এর খুনি তাদেরই বুলেটে খালেদা জিয়া বিধবা হয়েছেন। আওয়ামী লীগের লোকেরা তাকে (জিয়া) খুন করতে যায়নি। তার আপন লোকেরাই তাকে হত্যা করেছে। জিয়া পরিবারের বিশ্বাসঘাতকতাই অনেকের মাঝে বিশ্বাসঘাতকতা উসকে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির পিতার খুনি কারা, তাদের বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল কে, কারা হত্যাকারীদের রক্ষা করতে সংবিধান সংশোধন করেছিল তা জানতে হবে। জাতির সামনে এই খুনিদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, আমেরিকা-পাকিস্তান বঙ্গবন্ধুকে ভয় পেত, তার নেতৃত্বকে ভয় পেত। তাই তাকে হত্যা করেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে খুন করে এ দেশের মানুষের হৃদয় থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম ও ভালোবাসা মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা একমাত্র সম্ভব হয়েছে- কারণ এ দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতো এবং বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে একটি বঙ্গবন্ধু গবেষণাগার তৈরির জন্য তিনি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুই এ দেশের স্বাধীনতার রূপকার। তিনি ছিলেন এ দেশের অসহায়-নির্যাতিত মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের ত্রাণকর্তা। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেই এ দেশ পরিচালনার সব দিকনির্দেশনা বিদ্যমান ছিল এবং আজ এ দেশের যত উন্নয়ন ও আগ্রগতি হচ্ছে তা সবই বঙ্গবন্ধুর অবদান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম। এ সময় ইউনিভার্সিটির প্রোভিসি অধ্যাপক ড. এম ইসমাইল হোসেনসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।