চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ অডিটোরিয়াম আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। প্রধান আলোচক ছিলেন কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেন। সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
প্রধান অতিথি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে খুব ভালোবাসতেন। আমি খুব স্নেহ পেয়েছি। যখন একদিন বঙ্গবন্ধুর কাছে ধানমন্ডিতে গেলাম, তখন দেখলাম বাসায় কোন সিকিউরিটি নেই। কোন বাধার সম্মুখীন হই নি। সহজেই রিসিপশনে নাম বলে তাঁর সাথে দেখা করতে ঢুকে পড়েছিলাম। তখন খানিকটা বিস্মিত হয়েছিলাম। একজন প্রধানমন্ত্রী কিভাবে এতো সাদামাটা সিকিউরিটিতে বসবাস করেন। এটা সম্ভব হয়েছিলো কারণ তিনি এদেশের মানুষদের বিশ্বাস করতেন। মানুষের প্রতি ছিলো অগাধ আস্থা। কিন্তু এদেশের মানুষ সেই আস্থার মর্যাদা দিতে পারেনি।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, বঙ্গবন্ধু একদিকে আলোচনা করছিলেন অন্যদিকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আমি কিছু এক্সক্লুসিভ করতে চাইছিলাম। আমি বলেছিলাম, শুভপুর ব্রিজটা উড়িয়ে দিতে চাই। এ ব্রিজ উড়িয়ে দিলে ঢাকা-চট্টগ্রামের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি আমার প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছিলেন। পরে যখন খবর পাই কুমিল্ল্লা থেকে পাকবাহিনীর ২৬টি ট্রাক চট্টগ্রামে আসছে তখন আমরা ব্রিজটি ভেঙে দেই। রাস্তায় গাছ কেটে ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করি। এসময় মীরসরাই ও সীতাকুন্ডের মানুষের অবদানের কথাও স্মরণ করেন সাবেক এই মন্ত্রী। তিনি বলেন জিয়া কখনও বলেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক। সে কথার কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না। আমি একবার এবিষয়ে সংসদে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক এইকথা তিনি কোথাও বলেছেন এমন প্রমাণ দেখাতে পারলে সংসদ ত্যাগ করার কথাও বলেছিলাম। কিন্তু কেউ প্রমাণ দিতে পারেনি। আজকে দেশ উন্নত হচ্ছে। আমাদের আগের থেকে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। বেড়ে চলছে রেমিট্যান্স। এই পথে হাঁটলে শীঘ্রই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হবে।
প্রধান আলোচক বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময় তার থেকে অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা ছিল। কিন্তু তারা কেউ বঙ্গবন্ধুর স্থান দখল করতে পারেনি। তাদের কাছে কিছু কিছু বিষয়ের ঘাটতি ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাদের থেকে কম শিক্ষিত হয়েও এদেশের মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন। তাইতো সেদিন বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সবাই মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো।
উপাচার্যের (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আওরঙ্গজেব, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অ্যধাপক ড. ফরিদ উদ্দীন আহামেদ, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দার চৌধুরী, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাকির হোসেন, সাবেক রেজিস্ট্রার অধ্যাপক কামরুল হুদা, ইংরেজি বিভাগের সভাপতি মাইনুল হাসান চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গণি প্রমূখ।