আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন ডিসেম্বরে। এ সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে পদ পেতে আগ্রহী নেতারা এরই মধ্যে লবিং-তদবির শুরু করেছেন। নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। সংগঠনের জন্য নিজেদের ত্যাগ ও ভূমিকার কথা নানাভাবে হাইকমান্ডকে জানাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের ২১তম এ সম্মেলনে কারা নেতৃত্বে আসবে তা নিয়ে কানাঘুষা চলছে দলীয় ফোরামে। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন কারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আসবে।তিনি জানান, উজ্জ্বল ভাবমূর্তির নেতারাই এবার সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির নেতৃত্বে আসবে।বুধবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আগে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা কমিটির সম্মেলন হবে। পরে জাতীয় সম্মেলন। এ সম্মেলনে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ কর্মীরাই নেতৃত্বে আসবে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি যাদের আছে, তারাই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিতর্কিতদের কমিটিতে জায়গা দেবেন না।
এর আগে ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিল, তিনি আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিলে প্রার্থী হবেন না। তবে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি চান, তা হলে তিনি ফের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে রাজি আছেন।১৭ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছিলেন।
ফের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, দ্বিতীয়বার পার্টির সাধারণ সম্পাদক থাকব কিনা, তা নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। আমি নিজে প্রার্থী হব না। নেত্রী চাইলে আবার দায়িত্ব দেবেন, না চাইলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেবেন।
পারসোনালি আমি কোনো প্রার্থিতা ঘোষণা করব না। নেত্রী যাকে ইচ্ছা দেবেন। আমাকে যদি তিনি থাকতে বলেন, সেটি তিনি বলতে পারেন। আবার বলতে পারেন বিদায়। আরেকজন আসবে, নতুন মুখ আসবে। ওয়েলকাম, কোনো অসুবিধা নেই’- যোগ করেন কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাধারণ সম্পাদকের পদটি পার্টির সর্বোচ্চ পদধারীর নির্দেশেই চলে। এ ক্ষেত্রে অনেক প্রার্থী থাকতে পারেন। আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের সাধারণ সম্পাদক একবার হয়েছি, এটিই সম্মানের। সারাজীবন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবেই থাকতে চাই।
আওয়ামী লীগের সম্মেলন, সভাপতি অপরিবর্তিত এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনার নাম শোনা যাচ্ছে। আরও কয়েকজনের নামও আসছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের পার্টিতে আমাদের সভাপতি পার্টির সুপ্রিমও শেখ হাসিনা। আমাদের পার্টিতে বারে বারে যেটা হয় দলের কাউন্সিলরা সবসময় নেতৃত্ব নির্বাচনে নেত্রীর মনোভাবের ওপর সবকিছু ছেড়ে দেন। জেনারেল সেক্রেটারি পদটি পার্টির সুপ্রিমওর নির্দেশনায় চলে। এখানে প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবার আছে।’
তিনি বলেন, ‘নেত্রীর ইচ্ছার বাইরে এলে কিছু হয় না। নেত্রী জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে যাকেই চয়েজ করেন আওয়ামী লীগের কর্মী-কাউন্সিলররা তার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। আমি ভাগ্যবান মানুষ; আমি আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি হয়েছি। অনেক কর্মী আজীবন ত্যাগ করেও এই পদটি পাননি। একবার হয়েছি এটিই বিরাট সম্মানের ব্যাপার।’
প্রসঙ্গত ১৪ সেপ্টেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। তিন বছর পর পর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন হয়।