ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের গ্রেপ্তারের পেছনে নাটক আছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।
রিজভীর দাবি, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় দেশবিরোধী চুক্তি আড়াল করতেই সম্রাটকে আটকসহ ক্যাসিনো নাটক সাজানো হয়েছে।’
রবিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সঙ্গে একতরফা চুক্তি করে প্রধানমন্ত্রী তার সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গ করেছেন। এজন্য সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, চুক্তির বিষয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরাতে এতদিন পর সম্রাটকে গ্রেফতার দেখানোর নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে।
বিএনপি এ নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি, একতরফাভাবে সবকিছু দিয়ে আসা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সমুদ্রবন্দর, ফেনী নদীর পানি এবং জ্বালানি সংকটময় দেশের গ্যাস ভারতের হাতে তুলে দেয়ার যে চুক্তি করা হলো, তা সুস্পষ্ট সংবিধান পরিপন্থী। চুক্তির ব্যাপারে সংসদসহ কোনো পর্যায়েই আলোচনা করেনি সরকার। তিস্তাসহ কোনো সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে সরকার।’
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিএনপির নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের নামে রংপুর-৩ আসনে প্রহসন হয়েছে, আমরা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি।’
‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে যাবে। বেশ কয়েক বছর ধরে সামাজিক সূচকে সাফল্যের শিখরে থাকা বাংলাদেশ এবার চমক দেখাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যের আন্তর্জাতিক সূচকেও। নানা প্রতিবন্ধকতায় ব্যবসা-বাণিজ্যের বিশ্ব সূচকে বাংলাদেশের এতদিনের দুর্বল অবস্থান পাল্টে গেছে এ বছরেই। সরকারের নানা উদ্যোগ ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টানগুলোর সংস্কারের ফলে বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিতব্য ‘ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট ২০২০’এ তালিকায় সবচেয়ে উন্নতিকারী ২০ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।’
শনিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগকালে জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের শ্রীহাস্য চৌমুড়ী বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত এক পথসভায় বক্তৃতাকালে অর্থমন্ত্রী, কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই) আসনের সাংসদ ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
সভায় মন্ত্রী আরো বলেন, চলতি বছরের বিশ্ব অর্থনীতির বড় সূচকগুলোতে একে একে প্রশংসনীয় অবস্থানে চলে এসেছি আমরা। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর ২০১৯ ডেভেলপমেন্ট আউটলুক অনুসারে, উচ্চ প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ৪৫টি দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। বাংলাদেশ এশীয় প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুততম প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রাখবে। স্পেকটেটর ইনডেক্স ২০১৯ অনুযায়ী, গত ১০ বছরে মোট ২৬টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সূচক অনুসারে, দ্রুততম সময়ে দারিদ্র্য হ্রাসকারী দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর সিলেট অঞ্চলকে ছাড়িয়ে কুমিল্লার কৃতি সন্তান হিসেবে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর তার সংসদীয় এলাকার নাঙ্গলকোট উপজেলায় প্রথম পদ যাত্রা উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ দলীয় সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জিবীত ছিলেন।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অন্তত ১০ স্থানে পথ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এরমধ্যে ভোলাইন বাজার, পাটোয়ার ওমরগঞ্জ বাজার, শ্রীহাস্য চৌমুড়ী বাজার, জোড্ডা বাজার, বটতলী বাজার, বক্সগঞ্জ বাজার ও ঢালুয়া বাজারের পথ সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বক্তব্য রাখেন।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত এসব পথ সভায় তিনি স্থানীয়দের আশ্বস্থ করে বলেন, প্রায় সব সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে বিশেষভাবে এগিয়ে যাবে এ উপজেলার সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড। বিগত ১০ বছরে যা উন্নয়ন হয়েছে, আগামী ৫ বছরে তার চেয়েও বেশী উন্নয়ন করবো ইনশাল্লাহ। আমি আপনাদের পাশে আছি সবসময় পাশেই থাকবো। শুধু আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
এসব অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সম্পাদক এম.এ করিম মজুমদার, নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুদ্দীন কালু, ভাইস-চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ, পৌর মেয়র আব্দুল মালেক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক সুমন, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যাবৃন্দসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ দলীয় সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।