বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয়ও দিয়েছেন
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় তিনি জানান, সরকার শুরু থেকেই করোনা ভাইরাসের বিষয়টিকে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এছাড়াও করোনা নিয়ে ভীতিকর অবস্থার মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত একেবারেই অমানবিক। জনস্বার্থে নির্বাচন স্থগিত রাখার আহ্বান করেন।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ নিয়ে কোনো আতঙ্ক ছড়ানো যাবে না। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দয়া করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি করবেন না। মানুষের এ দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। গতকাল রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির এ বৈঠকে স্কাইপে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন লন্ডনে থাকা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়. নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাস একটা জাতীয় ও বৈশ্বিক বিপর্যয়। সে জন্য দল-মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষ জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে এ বৈশ্বিক বিপর্যয়কে মোকাবিলা করতে হবে।তিনি বলেন, বিএনপির লিফলেটে জনসমাগম থেকে দূরে থাকা, স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া, মানুষদের সচেতন করে তোলা বিশেষ করে যারা গ্রামে আছেন তাদের সব দলের পক্ষ থেকে সবাইকে বাড়িতে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা উচিত সবাই যেন হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে যায়।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রাক-প্রস্তুতি না থাকার জন্য ‘সরকারের ইচ্ছাকৃত উদাসীনতা ও ব্যর্থতাকে দায়ী করেন মির্জা আলমগীর। করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট, চিকিৎসকদের বিশেষ পোশাক সরবারহ, তাদের প্রশিক্ষণসহ হাসপাতালে এ রোগে আক্রান্তদের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া ও প্রান্তিক-নিম্ন আয়ের মানুষদের ভাতা প্রদানের দাবি জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ব্যাপক প্রভাব পড়ে গেছে। দুজন মারা গেছেন এ পর্যন্ত, ২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গোটা শহর খালি হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষ; যারা রিকশা চালান, যারা সিএনজি চালান, নির্মাণ শ্রমিকরা।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ইতিমধ্যে গার্মেন্টসের যে ডিমান্ড বিদেশে থেকে আসে সেই চাহিদা বাতিল হয়ে গেছে। ফলে মালিকরা খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন যে, গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বেতন কীভাবে দেবেন। এ অবস্থায় নিম্নআয়ের মানুষ, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক এসব নিম্নআয়ের মানুষদের সরকারের তরফ থেকে ভাতা প্রদান করা উচিত। নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আপদকালীন পারিবারিক ভরণপোষণ ও বিশেষ ভাতা-বীমার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। এটা করা অত্যন্ত জরুরি।