সীমান্তে ভারতের সড়ক নির্মাণের প্রতিবাদ জানিয়েছে নেপাল। কাঠমান্ডুর অভিযোগ, ভারত তার ভূখণ্ড দখল করেছে। যদিও নয়া দিল্লি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভারতীয় অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন দ্য ওয়্যার লেখে, গত বছর আগস্টে অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরকে দ্বিখণ্ডিত করে ভারতীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত করার পর নয়া দিল্লির প্রকাশ করা রাজনৈতিক মানচিত্রের বিরুদ্ধেও নেপালে প্রচণ্ড বিক্ষোভ হয়েছিল।
দ্য ওয়্যার জানায়, উত্তরখণ্ড রাজ্যে একটি সড়ক উদ্বোধনের পর ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে নেপালের বিরোধ এখন পুরোদস্তুর রেষারেষিতে রূপ নিয়েছে। কাঠমান্ডুর দাবি করা ভূখণ্ডের উপর দিয়ে এই সড়ক গিয়েছে। সড়কটি চীন সীমাে ন্তর কাছে অবস্থিত।
শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ধরচুলা ও লিপুলেখের মধ্যে এই সড়ক উদ্বোধন করেন। এই সড়ক দিয়ে ভারতীয় তীর্থ যাত্রীরা চীনের স্বশাসিত অঞ্চল তিব্বতের মানসরোবরে যেতে পারবেন। এতে সময় কয়েক দিন কম লাগবে। নেপালের বিরোধী দলীয় নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন এবং সরকারকে অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেন। এর একদিন পর নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের একতরফা কাজে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং নেপালের ভূখণ্ডে কোনো তৎপরতা চালানো থেকে বিরত থাকতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান।
দীর্ঘ এক বিবৃতিতে নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ১৮১৬ সালের সুগাওলি চুক্তি অনুযায়ী মহাকালী নদীর পূর্বদিকে অবস্থিত সব ভূখণ্ড নেপালের। এর মধ্যে লিমপিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখও রয়েছে।
ভারতের সর্বশেষ উদ্যোগ সম্পর্কে নেপাল বলে, ভারত যে একতরফা কাজ করছে তা সীমান্ত ইস্যু আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে বলে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে পৌঁছা সমঝোতার পরিপন্থী। নেপাল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের চেতনায় কূটনৈতিক সমাধান কামনা করেছিল উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, এই অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে নেপালি ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে কোনোরকম তৎপরতা না চালাতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় নেপাল।
কাঠমান্ডু পোস্টের এক রিপোর্টে বলা হয়, নেপালেল পররাষ্ট্র সচিব শঙ্কর দাস বৈরাগী শুক্রবার ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় কাওয়াতরার সাথে কথা বলেছেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গত বছর কালাপানি বিতর্ক তুঙ্গে ওঠার পর দুই পক্ষের পররাষ্ট্র সচিবদের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের জন্য নেপালের পক্ষ থেকে দুই বার প্রস্তাব দেয়া হয় কিন্তু ভারত তাতে সাড়া দেয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে সফরকারী একদল ভারতীয় সাংবাদিককে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গিওয়ালি বলেছিলেন যে, ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে দীর্ঘ দিনের এবং জটিল সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারে তাহলে নেপালের সাথেও পারবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে দাবি হয় যে, সড়কের অংশটি পুরোপুরি ভারতীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত। দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক প্রশ্নে ভারতীয় পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রিভাস্তভা বলেন, দুই দেশ বিরাজমান কোভিড-১৯ ইমারজেন্সির চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবেলার পর উভয় পক্ষ তারিখ চূড়ান্ত করার পর ওই বৈঠক হতে পারে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর