সাধারণ ছুটির মেয়াদ ঈদের ছুটির সঙ্গে মিলে ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ছে। আসন্ন ঈদুল ফিতরে সব অফিস-আদালতে টানা ১০ দিন ছুটি দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার।
পূর্ব নির্ধারিত সরকারি দিনপঞ্জিতে ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ধরা আছে ২৫ মে। এবার করোনার কারণে ঈদের ছুটি হতে পারে ২১ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত। ঈদের আগে-পরের দুটি সাপ্তাহিক ছুটির চার দিন ও শবেকদরের এক দিনের ছুটি এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে পারে বলে জনপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘চলতি ছুটি শেষ হতে আরো কয়েক দিন লাগবে। আশা করি বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সাধারণ ছুটি ও ঈদের ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’ তবে ঠিক কত দিন ঈদের ছুটি হবে তা নির্দিষ্টভাবে বলতে তিনি রাজি হননি।
ঈদ সামনে রেখে ছুটির নতুন পরিকল্পনা চলছে কি না জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘সরকার বিভিন্নভাবে চিন্তা করে দেখছে। সিদ্ধান্ত হলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’ করোনা মহামারির কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত টানা সাধারণ ছুটি চলছে। আজ মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সাধারণ ছুটি এবং ঈদ ছুটিসংক্রান্ত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার কথা। প্রতি ডিসেম্বরে নতুন বছরের সরকারি ছুটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়। অন্যান্য বছরের রীতি অনুযায়ী সরকারি ক্যালেন্ডারে চলতি বছরের পূর্বনির্ধারিত সম্ভাব্য ঈদ ছুটি হিসেবে বরাদ্দ আছে ২৪, ২৫ ও ২৬ মে। এর আগে ২১ মে শবেকদর এবং ২২ ও ২৩ মে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে সাধারণভাবেই ঈদের মোট ছুটি দাঁড়ায় ছয় দিন। করোনার কারণে স্বাভাবিক সব ক্যালেন্ডার এলোমেলো হয়ে গেছে। এ কারণে সরকার ভাবছে ২৬ মের পরের দুই কার্যদিবস অর্থাৎ ২৭ ও ২৮ মে-ও ছুটি ঘোষণা করবে। এতে করে ২৯ ও ৩০ মের সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ঈদের ছুটি দাঁড়াবে ১০ দিনে। এতে বিশেষজ্ঞদের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, মের শেষ দুই সপ্তাহের চূড়ান্ত সংক্রমণের সময়ে মানুষে মানুষে মেলামেশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১৬ মে’র পর ঈদের ছুটির আগে সরকারি কার্যদিবস পড়ে মাত্র চার দিন অর্থাৎ ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ মে। এরপর থেকেই ঈদ ছুটি শুরু হয়ে যাবে। করোনা বিষয়ে সরকারি বিশেষজ্ঞ দলের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি মাসের শেষ দুই সপ্তাহ বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ থাকতে পারে। গত কয়েক দিনের করোনা শনাক্তের হারে সে পূর্বাভাসেরই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সব কিছু মিলিয়েই ঈদ উপলক্ষে টানা ছুটির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও জনপ্রশাসনকে উল্লিখিত ছকে ছুটির প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে বলে জানা গেছে। শেষ দফা ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর সময় সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে ঈদ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রকারান্তরে ঈদ পর্যন্ত গণপরিবহন না খোলারও ইঙ্গিত দেওয়া হয়। তখনই ঈদ পর্যন্ত ছুটি চালিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়।
সূত্র মতে, সরকার একবারে মাসব্যাপী ছুটি ঘোষণা করতে পারে না। তাই সাত দিন, ১০ দিন করে ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে।