তুরস্কে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের অস্তিত্ব জানা গিয়েছিল গত ১১ মার্চ। এরপর থেকে বেশ দ্রুতই দেশের প্রতিটি স্থানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। একমাসের মধ্যেই তুরস্কের সবগুলো প্রদেশ আক্রান্ত হয়। চীন এবং ব্রিটেনের তুলনায় বেশ দ্রুত গতিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ে তুরস্কে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বহুগুণে বাড়বে বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। তুরস্কের অবস্থা হয়তো ইতালির মতো হয়ে উঠতে পারে – এমন আশংকাও ছিল। কিন্তু প্রায় তিন মাসের মাথায় এসেও সেটি ঘটেনি। এমনকি তুরস্কে পুরোপুরি লকডাউনও দেয়া হয়নি।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তুরস্কে মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৫১৫ এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৮৪ জন। কিন্তু চিকিৎসকগণ মনে করেন, প্রকৃত অর্থে মৃতের সংখ্যা এর দ্বিগুণ হতে পারে। কারণ, যারা পরীক্ষার মাধ্যমে কোভিড-১৯ রোগী হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে কেউ মারা গেলেই কেবল পরিসংখ্যানে দেখানো হয়। কিন্তু তারপরেও করোনা সংক্রমণের ভয়ংকর দিনগুলোতে তুরস্কে মৃতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমই ছিল।
অস্বাভাবিক লকডাউন
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সতর্ক করে বলছেন, তুরস্কের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে শেষ কথা বলার সময় এখনো আসেনি। কারণ, বহু দেশে এখনো প্রচুর মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তবে ব্রিটেনের কেন্ট ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজির শিক্ষক জেরেমি রসম্যান বলেন, তুরস্ক বেশ পরিষ্কারভাবেই একটি বড় ধরণের দুর্যোগ পাশ কাটিয়ে গেছে।
মি. রসম্যান বলেন, “যে কয়েকটি দেশ মোটামুটি দ্রুততার সাথে টেস্ট করেছে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের শনাক্ত করার মাধ্যমে তাদের আলাদা করেছে, তদের মধ্যে তুরস্ক অন্যতম।” তিনি বলেন, যে কয়েকটি দেশ সংক্রমণের বিস্তার কমাতে সক্ষম হয়েছে তুরস্ক তাদের মধ্যে অন্যতম।
তুরস্কে যখন সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছিল তখন দেশটিতে বেশ কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। এর মধ্যে ছিল – গণ পরিবহনসহ বিভিন্ন জায়গায় বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার, রেস্টুরেন্ট ও কফি-শপ বন্ধ করা, জনবহুল জায়গায় শপিং বন্ধ রাখা এবং মসজিদে জমায়েত বন্ধ করা।
-যাদের বয়স ৬৫ বছরের উপরে এবং ২০ বছরের কম, তাদের পুরোপুরি বাসায় আটকে রাখা হয়েছিল। এছাড়া ছুটির দিনগুলোতে কারফিউ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বড় শহরগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
-সংক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইস্তাম্বুল শহর। এই শহরটি তার ছন্দ হারিয়েছে – হৃৎস্পন্দন ছাড়া হৃদপিণ্ডের মতো অবস্থা হয়েছে ইস্তাম্বুল শহরের।