সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক- ২৫ বছর আগে পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনবহরে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৯ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় ২৫ জনকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এছাড়া ১৩ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।
বুধবার (৩ জুলাই) সকালে পাবনার অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুস্তম আলী এই রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনাত এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
রায় ঘোষণার সময় মামলার ৫২ আসামির মধ্যে ৩২ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামিরা সবাই ঈশ্বরদী উপজেলা, পৌর বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ঈশ্বরদির সাবেক পৌর মেয়র ও বিএনপি নেতা মোখলেসুর রহমান, ইশ্বরদী পৌর বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া পিন্টু, ইশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান প্রমুখ।
আলোচিত এই মামলার সব আসামি বিএনপির নেতাকর্মী। গত ৩০ জুন এ মামলায় বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠান আদালত। এছাড়া আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় এদিন বিএনপির আরও ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে রেলপথে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ট্রেনবহর যাত্রাবিরতি করলে অতর্কিত ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়।
এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি পুনঃতদন্ত করে পুলিশ। তদন্ত শেষে নতুনভাবে ঈশ্বরদীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়।
মামলার ৫২ জন আসামির মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন। গত ৩০ জুন ৩০ জন আসামি জামিন আবেদন করলে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।