ভারতের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে তা উড়িয়ে দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভারত থেকে যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে, সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং এটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ নিয়ে চিন্তিত বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
গত ৫ নভেম্বর অক্সফোর্ড উৎপাদিত ‘কোভিডশিল্ড’ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ পেতে সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এ উদ্যোগের আওতায় প্রথম ধাপের ছয় মাসের প্রতি মাসে বাংলাদেশকে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা ছিল সিরামের।
ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটকে আগামী কয়েক মাসের জন্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে দরিদ্র দেশগুলোকে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের জন্য আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।
গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়াল্লা বলেছেন, ‘রোববার ভারতীয় নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু শর্ত হলো, ঝুঁকিতে থাকা ভারতীয় জনগণের জন্য ডোজ নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য রফতানি করতে পারবে না সিরাম ইনস্টিটিউট।’
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারত একই সময়ে ভ্যাকসিন পাবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত হওয়ায় এ বিষয়ে বাংলাদেশের চিন্তার কোনো কারণ নেই। দুশ্চিন্তারও কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশে ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে এবং যা শিগগিরই সম্পন্ন করা হবে।’
দেশে কবে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে, এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই মাসের শেষেই আসবে।’
সরকার বিকল্প কিছু ভাবছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন রকম চিন্তা-ভাবনা করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইআই) সিইও যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তার ব্যক্তিগত। এটা ভারত সরকারের কোনো নীতি না।’
এদিকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব তাদের সঙ্গে করা বাংলাদেশের চুক্তির ওপর প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান।
সোমবার সচিবালয়ে করোনা ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারতে নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সচিব। এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন।