আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূতি ও তৃতীয় বছরে পদার্পণ উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরকারের বর্তমান মেয়াদে যুগপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্জলা মিথ্যাচার করেছেন।
‘তার এই বিভ্রান্তিকর ও দুরভিসন্ধিমূলক ভাষণ অন্তঃসারশূন্য কথামালার ফুলঝুরি ছাড়া আর কিছুই নয়।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের তথাকথিত উন্নয়ন, মানুষের জীবনমান বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, স্বাস্থ্যখাতের ইতিবাচক পরিবর্তন, আইনের শাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানসহ যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা ‘মিথ্যাচারের কালো দলিল’। দেশবাসী তার এই ভাষণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
‘প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র হত্যা, ভোটাধিকার হরণ, খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, টাকা পাচার, দুর্নীতি-লুণ্ঠন ও দুর্বৃত্তায়ন, দুঃশাসনের একযুগ পার করলো বাংলাদেশ,’ যোগ করেন রিজভী।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে ক্ষমতাসীন দুষ্টচক্র মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য-মানবাধিকার-ন্যায়বিচারকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে জনগণকে বোকা বানাতে তথাকথিত উন্নয়নের শ্লোগান তুলেছে।
তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র হরণ করে, মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে কথিত উন্নয়নের এক যুগপূর্তি করতে চান, তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সেদিন আর বেশি দূরে নয়, স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের মতো তাদেরও পতন হবে।
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, করোনা টিকা নিয়েও আওয়ামী সরকারের মাস্টারপ্ল্যান জনগণের কাছে পানির মতো পরিষ্কার। গতকালও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা বলেছেন- করোনা টিকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। ভারতই নাকি টিকা রপ্তানি করবে। কিন্তু গতকালই ভারতীয় হাইকমিশনার বলেছেন- বাংলাদেশে কবে টিকা আসবে তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। তাহলে কী দাঁড়ালো? টিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের স্বনির্মিত মিথ্যাচারই প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজরা কানাডায় গড়ে তুলেছে বেগমপাড়া। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গড়ে তুলেছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়। জনগণ যাতে ক্ষমতাসীনদের অনিয়ম-অনাচার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে সেজন্য ভিন্ন দল ও মতের মানুষের পেছনে ইউনিফর্ম পরিয়ে দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে ভাষণই দেন না কেন, স্বৈরাচার হিসেবেই তার কেবলমাত্র বিশজোড়া নামডাক হয়েছে।