কিছু কিছু মিডিয়া আমার বক্তব্য এডিট করে প্রচার করছে। আর স্বার্থবাজরা তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কানভারী করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা।
তিনি বলেন, আমি কী এ পর্যন্ত কোথাও বলেছি শেখ হাসিনা প্রহসনের নির্বাচন করেছেন। কিন্তু এটির অপব্যাখ্যা দিচ্ছে কেউ কেউ। আমি সব সময় বলে আসছি ২০০৮ ও ১৯৯৬ সালে এদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আর বিএনপি জিয়াউর রহমানের আমল থেকে ভোট কারচুপি শুরু করেছে।
আজ সোমবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার রুপালী চত্বরে নির্বাচনী পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে এবার চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমি বাংলাদেশের কোনো অনিয়মের কথা বলি নাই। আমি বলেছি নোয়াখালীর অপরাজনীতি, অনিয়ম ও আর দুর্নীতির কথা। কিন্তু কিছু কিছু মিডিয়া তা এডিট করে প্রচার করছে। আর স্বার্থবাজরা তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কানভারী করার চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের এখন আর আমার কথা শোনেন না। শোনেন তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের কথা। এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে আপনারও দায়িত্ব রয়েছে এখানাকার ভোট সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ করা। যারা তার (ওবায়দুল কাদের) শুভাকাঙ্ক্ষী তারা দয়া করে তাকে গিয়ে বুঝান।
উপস্থিত জনগণকে উদ্দেশ্য করে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমার সঙ্গে ওবায়দুল কাদের নেই, জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ নেই। ডিসি-এসপি নেই। নেই নির্বাচন কর্মকর্তা। আমার সঙ্গে আছেন শুধু জনগণ।
আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে তার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত করার নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। একজন এমপি পুত্রের নেতৃত্বে এ এলাকায় অস্ত্র সরবরাহও করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে কাদের মির্জা বলেন, যেখানে জামায়াতের সমর্থক বেশি সেখানে এক ধরনের সমস্যা এবং যেখানে বিএনপির সমর্থক বেশি সেখানে আরেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে ভোটের দিন। সুষ্ঠু ভোট বানচাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি আছি আপনাদের সাথে। এমন অবস্থা সৃষ্টি হলে আমাকে জানাবেন। আমি গিয়ে সেই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেব।
মির্জা কাদের বলেন, আমি যদি ভোটের দিন কোনো অনিয়ম করি তাহলে আল্লাহ যেন আমার সেদিন মৃত্যু দেন। আমি নিজেও কোনো অনিয়ম করব না, কাউকে করতেও দেব না।
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি আবারও বলেন, তারা এমন ভাব দেখায় যে, তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছে। এদেশে দুর্নীতিবাজদের বিচার করা হলেও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও যে সকল রাজনৈতিক নেতা দুর্নীতির সাথে জড়িত তাদের বিচার চায় মানুষ।
নিজের ৪৭ বছরের রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মির্জা কাদের বলেন, আমি ইচ্ছা করলে বিদেশ যেতে পারতাম, কিন্ত যাইনি। স্কুল-কলেজ থেকে রাজনীতি শুরু করি। বাবা ছিলেন একজন স্কুল মাস্টার। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটিয়েছি। জেল জলুমু নির্যাতন সয়েছি। কিন্তু জনগণের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে আছি। আপনারা আমাকে ভোট দিবেন, না দিলেও মনে কোনো কষ্ট থাকবে না। হাসিমুখে পরাজয় মেনে নেব এবং বিজয়ী প্রার্থীকে মিষ্টি খাইয়ে তারপর বাড়ি যাব। তবু কোনো অন্যায় করব না। যতদিন বেঁচে থাকব অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাব। এবার আমার এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের মূল উদ্দেশ্য প্রতিবাদ করা।