হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী রাহেল চৌধুরীসহ সাতজন আহত হয়েছেন, ভাঙচুর করা হয়েছে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর গাড়ি। এ সময় শহরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করে। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরে পৌর শহরের গয়াহরি এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থ লেনদেনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তোলেন উভয় দলের সমর্থকরা। এ নিয়ে দুই প্রার্থীর মধ্যে উত্তেজনা থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রাহেল চৌধুরীর গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় গাড়িতে থাকা প্রার্থী রাহেল চৌধুরী আহত হন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত তিনজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে বিএনপি প্রার্থীর চাচাতো ভাই শফিক মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান দলীয় কর্মীরা। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌর শহরে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরী জানান, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছাবির আহমদ চৌধুরী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা গয়াহরি গ্রামে কালো টাকা বিলি করছিলেন। বিষয়টি আমি প্রশাসনকে জানাই। পরে গ্রামবাসী হাতেনাতে কয়েকজনকে আটকও করেন। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রামবাসী ও নেতাকর্মীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার অনুরোধ করি। পরে আমি বাসায় আসার পথে গয়াহরি গ্রামের ভেতরেই চরগাঁও গ্রামের শতাধিক লোকজন আমার গাড়িতে হামলা চালায় এবং আমার গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় আমিসহ আমার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার বিচার আমি পৌরবাসীর ওপর ছেড়ে দিলাম।
বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ছাবির আহমদ চৌধুরী জানান, আমি রাতে গয়াহরি সেন্টারে এজেন্ট ফরম বুঝিয়ে দিতে যাই। আসার সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেলের ভাই শাহেল চৌধুরী প্রথমে আমার গতিরোধ করে। এরপর আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রাহেল এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় রাহেল চৌধুরীর সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আমার দিকে তেড়ে আসেন রাহেল ও তার সমর্থকরা। তারা আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে চাইলে আমার চাচাতো ভাই শফিক এগিয়ে আসেন। এতে তার পেটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ভুঁড়ি বেরিয়ে যায়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ পৌরবাসী ভোটের মাধ্যমে এর শক্ত জবাব দেবেন।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং চারজনকে আটক করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ চলছে।