পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি যশোর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে।এ সময় তিনি বলেন, আমাকে চোরের মতো পিটিয়েছে পুলিশ।যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দিলে বুধবার দুপুর সোয়া ৩টার দিকে হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়।
যশোর শামসুল হুদা স্টেডিয়ামে তাকে নিতে আসা হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থেকে বিপুকে সাহস যোগান।
এ সময় বিপু বলেন, ‘আমি নির্দোষ। অথচ আমাকে চোরের মতো পেটানো হয়েছে। আমি আপনাদের কাছে দোয়া কামনা করি। যাতে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারি।’
সোমবার রাতে যশোর শহরের পুরাতন কসবায় শহীদ মিনারে ইমরান হোসেন নামে এক পুলিশ সদস্যকে মারপিটের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ হাসান বিপুসহ চারজনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার দুপুরের পর মাহমুদ হাসান বিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর রাতেই অসুস্থ অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
মাহামুদ হাসান বিপুর অভিযোগ, ‘পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে নির্মমভাবে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। এমন নির্যাতন কেউ চোরের সঙ্গেও করে না’।
এদিকে বিপুকে চিকিৎসা প্রদানকারী অর্থোপেডিক সার্জন আব্দুর রউফ জানান, বিপুর শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া তার ডায়বেটিস ধরা পড়েছে। তার সুস্থ হতে সময় লাগবে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলিপ কুমার রায় বলেন, ক্রমশ তার অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিপুকে নির্মম নির্যাতন করে পুলিশ ক্ষান্ত হয়নি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে শহরের অনেক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তিনি।
অবশ্য পুলিশ সুপার মুহাম্মাদ আশরাফ হোসেন দাবি করেছেন, ‘পুলিশ হেফাজতে বিপুকে কোনো প্রকার মারধরের ঘটনা ঘটেনি। উনি একজন সম্মানিত লোক জিজ্ঞাসাবাদের কিছু নিয়ম আছে সেগুলো মেনেই আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ওনাকে হেফাজতে মারার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তারপরও অভিযোগ যেহেতু আসছে সে কারণে সিনিয়র কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত টিম করে দেওয়া হয়েছে। ফলে কোনো ব্যাত্যয় হলে তা তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই বলা সম্ভব হবে।’
পুলিশ সুপার জানান, পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগে দায়ের মামলায় বিপুর সঙ্গে আটক শাহিনুজ্জামান তপু ও ইমামুল হককে আসামি করা হয়েছে। অন্যরা নিরাপরাধ হওয়ায় তাদের আসামি করা হয়নি।