নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ত্রাণ (শাড়ি-লুঙ্গি) নিতে এসে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ‘ঘুষি’ খাওয়া এনামুল হক কালু নামের সেই বৃদ্ধ এবার মেয়রের পক্ষ থেকে চাল পেয়েছেন। রবিবার সকালে বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সেই বৃদ্ধের হাতে ১০ কেজি চাল তুলে দেন মেয়র। তার পাশাপাশি আরো দুস্থ-দরিদ্রকে চাল উপহার দেন মেয়র।
এর আগে, গত শুক্রবার সকালে ঈদ উপহারের ত্রাণ বিতরণ করেন কাদের মির্জা। যার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বৃদ্ধ কালুকে একটি শাড়ি দেন মেয়র কাদের মির্জা, তিনি সেটা পরিবর্তন করতে চাইলে তাকে ঘুষি মেরে সরিয়ে দেন মেয়র। পরে ‘ত্রাণ নিতে আসা বৃদ্ধকে ঘুষি মারলেন কাদের মির্জা’ শিরোনামে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
এরপর সেই বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেইজে একটি স্ট্যাটাস দেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আপনারা জানেন মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনে জনজীবন অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি আমার পৌরসভা থেকে নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষদের জন্য বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছি। এর আগেও আমি সর্বদা চেষ্টা করতাম অসহায় গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে থাকতে। আমার পৌরসভা ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে, আমি শুধু কোম্পানীগঞ্জ নয়, কবিরহাট, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, সেনবাগসহ বিভিন্ন জনপদের অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করে আসছি। কখনো কোনো মানুষ সাহায্য প্রত্যাশা করে আমার কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে যায়নি।
আজও (শুক্রবার) আমার পৌরসভায় অসহায় মানুষদের এক হাজারের বেশি শাড়ি-লুঙ্গি, ৫০০ জনকে নগদ অর্থ ও প্রায় দুই হাজার জনের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। পৌরসভার ছোট্ট আঙিনায় সহস্রাধিক মানুষ একত্রিত হয়ে যাওয়ায় দ্রুত কাপড় বিতরণ করতে হয়েছিল।
তাই যাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে তাদের দ্রুত চলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছিল। তখন একজন মানুষ কাপড় পাওয়ার পরও দাঁড়িয়ে থাকায় এবং একাধিকবার বলার পরও সে মাস্ক না লাগানোর কারণে তাকে দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য হাত দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এখানে তাকে আঘাত করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি কোনো আক্ষেপও করেননি।
সহস্রাধিক মানুষের মাঝে একযোগে এতগুলো ত্রাণ বিতরণ করার সময় অজান্তে কিছু অসাবধানতা হতে পারে, এ ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত কোনো কিছু করা হয়নি। আমি সব সময় অসহায় গরিব মানুষের পাশে আছি। কখনো কেউ আমার কাছে সাহায্যের জন্য এসে খালি হাতে ফিরে যায়নি। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমি যত দিন বেঁচে থাকব অসহায় গরিব মানুষের সেবা করে যাব।
প্রত্যাশা রাখব অন্যের সমালোচনা না করে, যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় গরিব মানুষের সহযোগিতায় হাত বাড়ান। স্ট্যাটাসের সত্যতা নিশ্চিত করে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সহযোগিতায় প্রায় ৪ হাজার অসহায় গরিব মানুষের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গি, খাদ্য এবং নগদ অর্থ উপহার প্রদান করি।’
তিনি আরো বলেন, ‘সহস্রাধিক মানুষের মাঝে একযোগে এতগুলো ত্রাণ বিতরণ করার সময় অজান্তে কিছু অসাবধানতা হতে পারে, এ ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত কোনো কিছু করা হয়নি। একজন মানুষ কাপড় পাওয়ার পরও দাঁড়িয়ে থাকায় এবং একাধিকবার বলার পরও মাস্ক না লাগানোর কারণে তাকে দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য হাত দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এখানে তাকে আঘাত করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি কোনো আক্ষেপও করেননি।’