আইপিএলের ফাইনলে আজ রবিবার (২৬ মে) রাতে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ।
ফাইনালের মধ্য দিয়ে আজ পর্দা নামছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ১৭তম আসরের। এবারের আসরে দুর্দান্ত ফর্ম দেখিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। এরপর রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের টিকেট কেটেছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদও। তাতে লিগ ফাইনালের মহারণে দুইবারের (২০১২ ও ২০১৪ সালে) শিরোপাজয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে মাঠে নামবে এক বারের (২০১৬ সালে) শিরোপা ঘরে নেয়া সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। যদিও এর আগে কোয়ালিফায়ারে প্রতিপক্ষ কলকাতার মুখোমুখি হয়ে হেরেছিল হায়দরাবাদ। এবার ফাইনালে সেই হারের বদলা নিতে মুখিয়ে থাকবে অভিষেক শর্মা-কামিন্সের দল।
আইপিএলের এবারের আসরের লিগ পর্বের প্রথম নয় ম্যাচের ৮টিতে জয় তুলে নিয়ে চমক দেখিয়েছিল রাজস্থান। তবে পরের পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হেরে ছন্দ হারায় স্যামসনরা। এরপর লড়াই করে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার নিশ্চিত করেছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাইনালে টিকেট পেল না রাজস্থান। দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ার ম্যাচে স্যামসনদের ৩৬ রানে হারিয়েছে কামিন্সের দল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। এমন হারে ফাইনাল খেলার সুযোগ হাত ফসকে বেরিয়ে গেল শুরুতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রাজস্থান রয়্যালসের।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে গত শুক্রবার আগে ব্যাট করে রাজস্থানকে ১৭৬ রানের লক্ষ্য দেয় হায়দরাবাদ। ১৭৬ রানের জবাবে পাওয়ার প্লেতে ভালোই শুরু করে রাজস্থান রয়্যালস। ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে তারা তোলে ৫১ রান। তবে ২১ বলে ৪২ রান করে যশস্বী জয়সোয়াল ফিরে গেলে রানের চাকা থেমে যায় রাজস্থানের। ১ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান থেকে ৯২ রান তুলতে ৬ উইকেট হারায় দলটি। এরপর রিয়ান পরাগ (৬), অশ্বিন (০) এবং হেটমাইয়ার ৪ রানে আউট হলে বিপাকে পড়ে রাজস্থান।
তবে রোভমেন পাওয়েলকে সঙ্গে নিয়ে রাজস্থানশিবিরে হাল ধরেন ধ্রুব জুড়েল। কিন্তু ১২ বলে ৬ রান করে আউট হন পাওয়েল। তাতে ফাইনালের টিকেট পেতে শেষ ১২ বলে রাজস্থানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫২ রান। মারকুটে ব্যাটিংয়ে ২৬ বলে ফিফটি তুলে নেন জুড়েল। ৩৫ বলে ৫৬ রান করে জুড়েল অপরাজিত থাকলেও শেষ রক্ষা হয়নি রাজস্থানের। নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান তুলতে পারে তারা। এতে ৩৬ রানের জয় পায় হায়দ্রাবাদ। হায়দ্রাবাদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন শাহবাজ আহমেদ। এছাড়া অভিষেক শর্মা দুটি, প্যাট কামিন্স এবং টি নাতারাজান একটি করে উইকেট নেন। এদিকে এখনো ফাইনাল না হলেরও থেমে থাকেনি পরিসংখ্যান।
এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীর তালিকায় শীর্ষে আছেন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যঙ্গালুরুর বিরাট কোহলি। ১৫ ম্যাচে গড়ে ৬১.৭৫ করে বিরাট করেছেন ৭৪১ রান। এবারের আইপিএলে বিরাটের ধারেকাছেও নেই কোনো ব্যাটার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের সংগ্রহ ৫৮৩। তার দল অনেক আগেই বাদ পড়েছে শিরোপা দখলের লড়াই থেকে। বল হাতে সবচেয়ে বেশি ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন পাঞ্জাব কিংসের বোলার হার্শাল প্যাটেল। ১৪ ম্যাচ খেলে ৯.৭৩ ইকোনমিতে প্যাটের তুলে নিয়েছেন ২৪ উইকেট। যেখানে এবারের আসরে একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে দল পাওয়া মোস্তাফিজ ৯ ম্যাচ খেলে ৯.২৬ ইকোনমিতে তুলে নিয়েছেন ১৪ উইকেট।
এদিকে জুনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে জায়গা পাওয়া কোনো ক্রিকেটারই এবারের আইপিএলের ফাইনালে নেই। কাকতালীয়ভাবে যেসব ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে ভারতীয় খেলোয়াড়রা খেলেছেন তারা আগেই বিদায় হয়েছেন। যদিও আইপিএলের মাঝপথে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। ভারতের বিশ্বকাপ দলের ১৫ সদস্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪ জন সদস্য মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের। অথচ পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা মুম্বাই সবার আগে আইপিএলের লিগ পর্ব থেকে ছিটকে পড়েছে। তিনজন করে আছেন দিল্লি ক্যাপিটালস ও রাজস্থান রয়্যালস থেকে। দিল্লি পয়েন্ট তালিকার ছয়ে থেকে আইপিএল শেষ করেছে, তৃতীয় হয়ে প্লে-অফ পর্বে ওঠা রাজস্থান গত পরশু দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার থেকে বিদায় নিয়েছে।