বেগম খালেদা জিয়ার মামলাকে সম্পূর্ণ সাজানো বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের জামিন দেয়া হলেও বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনী। তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাবন্ধী করে রাখার মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্রকে বন্ধি রাখতে চায়। কারণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক। যিনি সারাজীবন গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করে গেছেন আজকে তাকে এই সরকার কারারুদ্ধ করে রেখেছে।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল সহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিচারবিভাগের ওপর আমাদের নির্ভর করার কথা, সাধারণ জনগণের নির্ভর করার কথা। কিন্তু এই বিচার বিভাগের কাছে আমারা কোনো বিচার পাই না। এই বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগ সরকার, অনির্বাচিত সরকার তাদের করা আয়ত্ব হয়েছে, তাদের নির্দেশে এখন তারা বিচার করে।
তিনি বলেন, ৯৪ সালে ট্রেন হামলায় পাবনাতে যে বিচার হয়েছে কয়দিন আগে, এটা কখনো কোনো সভ্য সমাজে আইনের কোনো ইতিহাসের মধ্যে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক রায় হতে পারে না। আমরা এই রায়ে হতাশ নই, বিক্ষুদ্ধ। এখানে ন্যায় বিচার থেকে সম্পুর্নভাবে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ। তিনি বলেন, আজকে বেগম খালেদা জিয়াকে যে সাজা দেয়া হয়েছে, একই ধরনের মামলা আজকের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ছিলো ১/১১’র সময়। সেই ১৫ টা মামলা তারা খারিজ করে দিয়েছে, বাতিল করে দিয়েছে। আর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে আরো মামলা যোগ করা হয়েছে।
আজকে আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাচ্ছি এ কারণে তার মামলাগুলো সম্পূর্ণভাবে সাজানো একটি মামলা। দ্বিতীয় হলো একই ধরনের মামলায় আপনাদের অনুসারী তাদের জামিন দিচ্ছেন। কিন্তু আমাদেরকে জামিন দিচ্ছেন না। এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি এবং সরকার এটি আটকে রেখেছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামীকালের এই হরতালকে আমরা সমর্থন করবো, কারণ জনগণের এটা জনগণের দাবি, জনগণের সমস্ত দাবি গুলোকে আমরা সমর্থন করবো। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি একটা গণদাবি, সাধারণ মানুষের দাবি, দলমত নির্বিশেষে সবায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় এবং গণতন্ত্রের মুক্তি চায়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভয়ংকর গণতন্ত্র বিনাশী সরকার মানুষের অধিকার যেভাবে কেড়ে নিচ্ছে, তাকে অপসারণ করতে হলে জনগণের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আজকে সেই ঐক্য আমাদেরকে সৃষ্টি করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ভাইদেরকে মুক্ত করতে হলে, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হলে, হাবিব উন নবী খান সোহেলকে মুক্ত করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই জনগণের ঐক্যের মধ্য দিয়ে গণঐক্য তৈরি করতে হবে, সমস্ত রাজনীতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে, একটা গণজোয়ারের মধ্য দিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে আমাদের পরাজিত করতে হবে।
তিনি বলেন, সারাদেশে আওয়ামী লীগ একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। আইনশৃংখলা ব্যবস্থা চরম ভাবে ভেঙ্গে পরেছে। দিনে দুপুরে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।