গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীনজাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ত্যাগ করলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জোট ত্যাগ করার এই ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে গত শনিবার অনুষ্ঠিত দলের এক সভায় সকল পর্যায়ের নেতারা ফ্রন্ট ছাড়ার জন্য মত দেন।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব বা ঠিকানা খোঁজার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে জনগণের সকল সমস্যায় তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নতুন উদ্যমে পথ চলা শুরু করছে।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কার্যকারিতা এবং তৎপরতা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ক্ষুব্ধ ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গত ৫ নভেম্বর ফ্রন্টে যোগ দিয়েছিল কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।
সোমবার (৮ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সভাপতি কাদের সিদ্দিকী এ ঘোষণা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জনগণের সব সমস্যা সমাধানে তাদের পাশে থেকে সম্পন্ন নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করবো। একই সঙ্গে গণতন্ত্র রক্ষায় প্রয়োজনে সব দলের সঙ্গে কাজ করবো। জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যফ্রন্ট ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
‘ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা, সম্প্রতি রিফাত হত্যাসহ কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি কোনো কথা বলেনি। আমরা ছোট দল হলেও এসব জাতীয় ইস্যু নিয়ে বসে থাকতে পারি না। তাই জনগণের দাবি, সমস্যা সমাধানে ও ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব এবং ঠিকানা খোঁজার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যমে আমরা কাজ করতে চাই।
গত নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা কাদের সিদ্দিকী বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন পৃথিবীকে অবাক করা এক প্রহসন! এর আগে বিশ্বের কেউ এমন প্রহসনের নির্বাচন দেখেনি। নির্বাচন পরবর্তী ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ছিল দেশবাসীর ইচ্ছার প্রতিফলন।
‘কিন্তু এর অল্প ক’দিন যেতে না যেতেই গণফোরামের প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর জাতির পিঠে ছুরি মারেন। এরপর মোকাব্বির খানকে ড. কামালের রুম থেকে বের করে দেওয়ার কয়েকঘণ্টা পর আবার তাকে পদ দেওয়া আমাদের কাছে স্পষ্ট না। এদিকে আবার বিএনপিতে একই অবস্থা। তাদের কেউ শপথ নিলো, বহিষ্কার হলো, আবার সংসদে গেলো। সংসদে যদি যেতেই হয় তবে কেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গেলেন না? আমার কাছে এসব স্পষ্ট না, আবার জাতির কাছেও এটা অস্পষ্ট। তাই অতীতে যেমন সব আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলাম, এবার সব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবো।’
সংবাদ সম্মেলনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।