সিরাজগঞ্জে ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ধর্মঘট আহ্বানের তিন দিন পর রোববার সকালে তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন আন্দোলনরত মালিক ও শ্রমিক নেতারা।
বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে ঢাকার দিকে সিরাজগঞ্জের বাস চলাচলের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সিরাজগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাদি আলমাজি জিন্নাহ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্থানীয় এমপি প্রফেসর ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না প্রশাসন ও পরিবহন নেতাদের নিয়ে বসেন। তিনি ও জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আমাদের আশ্বাস দেন। মূলত তাদের আশ্বাস এবং চলমান বন্যায় জনসাধারণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করেই অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট আমরা প্রত্যাহার করেছি।’
এদিকে, পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণার পর জেলার অভ্যন্তরীণ রুটসহ কুষ্টিয়া, খুলনা ও যশোহরসহ উত্তরের বিভিন্ন জেলায় বাস ও ট্রাক চলাচল শুরু হলেও বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে ঢাকার দিকে দূরপাল্লার বাস চলাচল সকাল ১১টা পর্যন্ত শুরু হয়নি।
জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী বলেন, ‘এমপি ও ডিসি সাহেবের অনুরোধে ও তাদের মীমাংসার আশ্বাসে আপাতত সিরাজগঞ্জ জেলার অভ্যন্তরে ও জেলার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বাস চলাচল শুরু করেছি। ঢাকার মহাখালীর সঙ্গে আমাদের পূর্ববর্তী দ্বন্দ্বের কোনো ধরনের নিষ্পত্তি বা সমঝোতা এখনও হয়নি। সে কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে ঢাকায় বাস চলাচল আপাতত বন্ধ আছে। এমপি সাহেব সেটিরও মীমাংসার আশ্বাস দিয়েছেন। মহাখালী বাস কাউন্টারে সিরাজগঞ্জের ৩টি কাউন্টার খুলে দেয়া ও আমাদের বাস চলাচলে প্রতিবন্ধকতা না করা হলেই কেবলমাত্র চলমান দ্বন্দ্বের পুরোপুরি মীমাংসা হবে।’
‘সেবা লাইন’ নামের ঢাকার একটি পরিবহন সার্ভিসের ব্যানারে অন্তত ২০টি বাস ঢাকা-সিরাজগঞ্জ রুটে চলাচল নিয়ে সিরাজগঞ্জ ও ঢাকার মহাখালীর বাস মালিক ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে গত দেড় মাস ধরে চরম দ্বন্দ্ব চলছে। এ কারণে দু’মালিক সংগঠন বিপরীতমুখে অবস্থান করে। ওই দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ১৩ জুলাই থেকে ঢাকার দিকে বাস চলাচল বন্ধ করেন সিরাজগঞ্জের মালিক ও শ্রমিক নেতারা। বিষয়টি সমঝোতা না হওয়ায় পূর্ব ঘোষিত আলিটমেটাম অনুযায়ী গত ১৮ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেয় জেলা বাস মালিক-শ্রমিক নেতাদের নিয়ন্ত্রিত সিরাজগঞ্জ পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
পরিবহন ধর্মঘটের আগে থেকেই সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা শুরু হয়। বন্যার পাশাপাশি ধর্মঘটের কারণে জেলাবাসীর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। পরিবহন সেক্টরের ধর্মঘটের সুযোগ নিয়ে জেলার অভ্যন্তরে চলাচলরত সিএনজিচালিত অটোরিকশা সিন্ডিকেট করে ভাড়া বাড়িয়ে দেয়ায় বিপাকে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। প্রশাসন বিষয়টি জেনেও অসাধু অটোরিকশা মালিক ও চালকদের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভুমিকা রাখেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রশাসন বিষয়টির মীমাংসা করতে ব্যর্থ হলেও ফের আমরা আন্দোলন শুরু করবো।’