মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে নালিশ করে আলোচিত বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা বর্তমান পরিস্থিতিতে তার অবস্থান ব্যক্ত করে বক্তব্য দিয়েছেন।
নিজের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ‘শার’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ৩৫ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তায় প্রিয়া জানিয়েছেন, তার পরিবার হুমকিতে আছেন।
ভিডিও বার্তায় দেখা যায়, একজন প্রশ্নকারীকে প্রিয়া বলছেন, “আমি ভাল নেই। আপনারা দেশে আছেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন পরিস্থিতি কোথায় যাচ্ছে। আমার পরিবার ভীষণ সমস্যায় আছে। গতকাল আমার বাসার তালা ভাঙতে চেষ্টা করা হয়েছে। বাসার সামনে মিছিল করা হয়েছে। হুমকি দেয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আমার পরিবারের ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কথা বলেছি আমি, তারা আমার ছবি ছাপাতে পারতো। এর মাধ্যমে পরিবারের সবার জীবনকে বিপন্ন করা হয়েছে। আমার পরিবারের কেউ আমার কাজের সাথে কোনোভাবেই যুক্ত নয়।”
হোয়াইট হাউজে আপনি কেন এমন কথা বলেছিলেন- প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া বলেন, “এই কথাগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ২০০১ সালে যখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরও ওপর নির্বাচনোত্তর চরম নির্যাতন চলছিল ৯৪ দিন ধরে। আজকের প্রধানমন্ত্রী তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী। তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য সারা পৃথিবীতে ঘুরেছেন। সমস্ত জায়গা বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে, তার অনুসরণে আমি বলেছি। যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে কোনো জায়গায় বলা যায়, এটা আমি তার কাছে শিখেছি।
ভিডিও দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুনঃ https://web.facebook.com/NotuntvNews/videos/2205775072885269
প্রিয়া আরও বলেন, “বাংলাদেশের যে পরিসংখ্যান বই রয়েছে। ২০০১ সালের পরিসংখ্যান বইয়ের সংখ্যালঘু যে চাপ্টার রয়েছে সেখানে এ বিষয়গুলো লেখা রয়েছে। প্রতি বছর সরকার যে সেনসাস রিপোর্ট (আদমশুমারি) বের করে সেই রিপোর্ট অনুসারে দেশভাগের সময় জনসংখ্যা (সংখ্যালঘু) ছিল ২৯ দশমিক ৭ ভাগ। আর এখনকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা হচ্ছে ৯ দশমিক ৭ ভাগ। এখন দেশের মোট জনসংখ্যা ১৮০ মিলিয়নের মতো। তো সেক্ষেত্রে জনসংখ্যা একইভাবে বৃদ্ধি পায়নি। ফলে আমি ক্রমাগতভাবে হারিয়ে গেছে বলে যে সংখ্যা বলেছি সেটা মিলে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যান বইয়ের ওপর ভিত্তি করেই অধ্যাপক আবুল বারকাত গবেষণা করেছেন। এবং সেই গবেষণায় উনি দেখিয়েছেন, প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ৬৩২ জন লোক হারিয়ে যাচ্ছে। এবং কী পরিমাণে ক্রমাগতভাবে লোক হ্রাস পেয়েছে। আমি ২০১১ সালে স্যারের সাথে সরাসরি কাজ করেছিলাম এ কারণে এ বিষয়ে অবহিত।”
তিনি বলেন, “আমি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে চাইনি। আমার নিজের গ্রামের কথা বলি। সেখানে ২০০৪ সালে ৪০টি পরিবার ছিল। এখন ১৩টি পরিবার আছে। এই মানুষগুলো কোথায় গেল, কোথায় আছে সেটা রাষ্ট্রের দেখার কথা।”